ফুটপাতের ময়লা ঘেষা এক কোণে শুয়ে আছে একটা লেজহীন অসহায় কুকুর। পেটের জ্বালায় পাঁচ টাকা দামের একটা ছোট্ট পাউরুটির অর্ধেক চুরি করে খেয়েছিল বলে, তার শরীরের এক অংশের লাল পশমওয়ালা লেজটা ধারালো ছুরি দিয়ে পোছ মেরে কেটে দিয়েছে একটা মানুষ! সে হয়তো ভেবে পায়না, কুকুর শব্দটা মানুষের কাছে এতো ঘেন্নার কেন? যদি মানুষকে কামড়ানোর দায়ে ও ময়লা খাবার খাওয়ার জন্য কুকুরকে ঘেন্নার চোখে দেখা হয়! তাহলে মানুষকে কোন চোখে দেখতে হবে? একটুতেই ঝগড়া বাধিয়ে ফেলে মানুষ। গালি হিসেবে ব্যবহার করে, এই কুত্তার বাচ্চা, তুই একটা কুত্তা, তোকে কুত্তার মতো পেটাবো। প্রাণী হিসেবে কুত্তা কি এতটাই জঘন্য? কুকুর প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে অনেক সময় মানুষকে কামড়ে দেয়। কিন্তু মানুষ তো কোন কারণ ছাড়াই মানুষের উপরে জুলুম, অত্যাচার সৃষ্টি করতে ভালোবাসে। তাহলে কী মানুষ শব্দটাকে কুকুর শব্দটার মতো করে গালি হিসেবে ব্যবহার করা উচিৎ? মানুষ হয়ে মানুষকে খুন করে জঘন্য ভাবে, নারী-শিশুদের ধর্ষণ করে। আরো কতো কী! এসব কারণে মানুষ শব্দটাকে এখন কুকুর শব্দটার মতোই গালি হিসেবে ব্যবহার করতে মন চায়। জাদুর নগরীতে তো আবার পুরুষ বেশ্যার অভাব নাই! তাদের আদর করে আমি বলি, জিগালো। যার অর্থ “পুরুষ বেশ্যা”। যাদের কামবাসনা জাগলে পুরুষ হয়ে অন্য একজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের সঙ্গে শুতে চায়। এরা তাহলে কেমন মানুষ? এদের আমি মানুষ বলে ডাকবো? যদি যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখিয়ে কুকুর শব্দটা বা প্রাণীটাকে ঘেন্নার চোখে দেখা হয় বা ডাকা হয়। তাহলে যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখিয়ে, মানুষকে ঘেন্নার চোখে আগে দেখা উচিৎ। তোমরা মানুষ, মানুষ শব্দটাকে গালি হিসেবে ব্যবহার করো না কেন! তোমরা তো কুকুরের চাইতেও বেশী জঘন্য কাজ করো। আজ থেকে আমি তোমাদের মানুষ বলে ডাকবো। ঝগড়া বাধলে বলবো, এই মানুষের বাচ্চা, তুই একটা মানুষ! তোকে মানুষের মতো পেটাবো।