আর্থার কোনান ডয়েলের জীবন ছিল বহুমাত্রিক এবং রোমাঞ্চপূর্ণ। তিনি একাধারে ছিলেন একজন ইতিহাসজ্ঞ, তিমি শিকারী, ক্রীড়াবিদ, যুদ্ধ-সাংবাদিক এবং আত্মিকবাদী।
জীবনের প্রথমভাগে, তিনি এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেষজবিদ্যা বিষয়ে পড়াশোনা করেন এবং শেষতক লন্ডনে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন। ভেষজ-ব্যবসায় গা-ছাড়া ভাবের কারণে তার হাতে থাকত বিস্তর অবসর। এবং এমনি একসময়ে তিনি সুবিখ্যাত শার্লক হোম্স সিরিজের গল্পগুলি লিখতে শুরু করেন। তার প্রথম সাফল্য ছিল ‘রক্তসমীক্ষা’ (A Study in Scarlet)। এটি সর্বপ্রথম ১৮৮৭ সালে বীটনের বড়দিনের বার্ষিকীতে (Beeton’s Christmas Annual) প্রকাশিত হয়। ১৮৯০ সালে ‘চিহ্নচতুষ্টয়’ (The Sign of Four) প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি ভেষজ-ব্যবসা ছেড়ে দেন এবং লেখা-লেখিতে পুরোমাত্রায় আত্মনিয়োগ করেন। তিনি অনেক গল্প, কল্প-কাহিনী এবং ইতিহাস-কেন্দ্রিক রোমাঞ্চ কাহিনী লিখলেও বিখ্যাত চরিত্র শার্লক হোম্স-কে নিয়ে লেখা গোয়েন্দা-কাহিনীগুলিই তাকে বিশ্বজোড়া খ্যাতি এনে দিয়েছে। সত্য বলতে কি, এই হোমস্ চরিত্রটির উপর একঘেয়েমিজনিত বিরক্তির কারণে ডয়েল যখন ‘শেষ সমস্যা’ (The Final Problem)-এ হোম্স-কে মেরে ফেলেন, তখন জনতার দাবির মুখে হোমস চরিত্রটিকে অলৌকিকভাবে পুনরুজ্জীবিত করতে বাধ্য হন।
বাস্তব জীবনেও তিনি দু-দুবার গোয়েন্দাগিরি করে অন্যায়ভাবে দোষী-সাব্যস্ত ব্যক্তিদের নির্দোষ প্রমাণ করতে সফল হন। ডয়েলকে বোয়ের যুদ্ধের সময় দক্ষিণ আফ্রিকান এক মাঠ-চিকিৎসাকেন্দ্রে অবদান রাখার জন্য ১৯০২ সালে নাইট উপাধিতে ভূষিত করা হয়।