লেখক সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর এর বাবা মোঃ শওকত হোসেন পেশায় ছিলেন সেনাবাহিনীর সদস্য। শৈশবে তাই সেনানিবাসের লেফট রাইট আর স্যালুট এর শব্দ, কিংবা বিকেলবেলা বাজানো বিউগল এর করুণ সুর শুনতে শুনতেই মনের মাঝে সৈনিক হবার সুপ্ত বাসনা জেগেছিল তাঁর। এদিকে, মা জাহানারা বেগমের ইচ্ছে ছেলেকে হাফেজ বানানোর, যার জন্য রাইফেল-উর্দির স্বপ্নকে ছুটি দিয়ে তাঁকে ভর্তি হতে হয়েছিল হেফজখানায়। ঢাকা জেলার পশ্চিমে ধামরাই থানায় যে হেফজখানায় তিনি ভর্তি হয়েছিলেন, তার নাম বাসনা আমানুল্লাহ ফোরকানিয়া হাফেজিয়া মাদরাসা, যে হেফজখানায় উন্মোচিত হয় তাঁর স্বপ্নের নতুন দুয়ার। হেফজখানায় বড় এক আলমারি ভর্তি ছিল নানা স্বাদের বই, যা সাধারণ ছাত্রদের পড়ার জন্য উন্মুক্ত ছিল। চেতনার বিকাশ ঘটানো বা লেখালেখির প্রথম রসদ যুগিয়েছিল সেই আলমারি। তিনি প্রাথমিক মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়েছেন ধামরাইয়ের জামিয়া ইসলামিয়া হাফিজুল উলুম ইসলামপুর থেকে। তারপর ঢাকায় আসেন ২০০২ সালে। মাধ্যমিক স্তর পড়েছেন মিরপুরে, মাদ্রাসায়ে দারুল উলুম এ। ২০০৭ সালে ধামরাইয়ের শরীফবাগ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করেন। ২০০৮ সালে দাওরায়ে হাদিস পাস করেন জামেয়া কোরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগ থেকে। তারপর দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরোজিতে অনার্স শেষ করে কর্মজীবনে সাংবাদিকতা এবং সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কিছুদিন। বর্তমানে লেখালেখির সাথেই জড়িয়ে আছেন পুরদস্তুর। তাঁর আগ্রহের মূলবিন্দু ইতিহাস। ঐশ্বরিক যেকোনো জ্ঞান, মানবিক বিজ্ঞান, লৌকিক-অলৌকিক ধর্ম, আন্তর্জাতিক ধর্মদর্শন এবং ধর্মতত্ত্ব বিষয়েও তাঁর আগ্রহ প্রবল। সেই আগ্রহের বহিঃপ্রকাশ ঘটে সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর এর বই সমগ্র-তে। ব্যক্তিগত পছন্দের কারণেই তিনি লেখেন মূলত ইতিহাস এবং ধর্মদর্শনের মিশেলে, যা প্রথাগত ধর্মীয় আবহের বাইরে গিয়ে নির্মাণ করেছে নতুন এক ভাষাভঙ্গি। ‘প্রিয়তমা’, ‘মিরাতুল মামালিক : দ্য অ্যাডমিরাল’, ‘প্রিয় প্রেয়সী নারী’, ‘সেই হীরা’, ‘সিংহহৃদয়’, ‘বদরের বীর’, ‘ইতিহাসের জানালা’, ‘হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল’, ‘সোরাকার মুকুট’ ইত্যাদি সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর এর বই সমূহ, যা বেশ ভালো মাত্রার পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে।