শ্রীবসন্তকুমার পাল (১৮৯০-১৯৭৫) লালনজীবনী-চর্চার পথিকৃৎ হিসেবে সম্মানিত। তাঁর জন্ম বৃহত্তর নদীয়া জেলার কুষ্টিয়া মহকুমার কুমারখালী থানার ধর্মপাড়া গ্রামে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গড়াই নদীর দক্ষিণ তীরে অবস্থিত ধর্মপাড়ার সংলগ্ন গ্রাম ভাঁড়ারা ফকির লালন সাঁইয়ের জন্মস্থান। সাধক লালন দেহত্যাগ করেন বাংলা ১২৯৭ সনের ১ কার্তিক, আর লালনচর্চার পথিকৃৎ বসন্তকুমার পালের জন্ম ওই একই সালে একই মাসে। দীর্ঘ সাহিত্যজীবনে তাঁর মাত্র দুটি বই প্রকাশিত হয়। মহাত্মা লালন ফকির (১৩৬১) ও তন্ত্রাচার্য শিবচন্দ্র বিদ্যার্ণব (১৩৭৯)। কাঙাল হরিনাথের জীবনীও তিনি রচনা করেন। কিন্তু ১৯৫৭ সালে রানাঘাটের একটি ছাপাখানা থেকে রহস্যজনভাবে পান্ডুলিপিটি হারিয়ে যায়। অর্ঘ্য নামে তাঁর প্রায় ৫০টি কবিতার একটি পান্ডুলিপিও তিনি প্রকাশ করে যেতে পারেন নি। পাঠক সমাবেশ ধারাবাহিকভাবে এই গ্রন্থগুলো প্রকাশ করবে। আজীবন দারিদ্র্য-দুঃখের সঙ্গে সংগ্রাম করে তাঁর জীবন কেটেছে। কিন্তু সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে তিনি একাগ্র নিষ্ঠায় লালনচর্চায় নিবেদিত ছিলেন। কোন রাষ্ট্রীয় বা প্রাতিষ্ঠানিক সম্মান-স্বীকৃতি তিনি পাননি। অত্যন্ত দীনহীন অবস্থায় ১৯৭৫ সালে তাঁর জীবনাবাসন হয়।