বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরে লে. কর্নেল পদমর্যাদায় কর্মরত। দূরদূরান্তের শর্টওয়েভ রেডিও স্টেশনগুলোর রিসেপশন রিপোর্ট লিখতে গিয়ে তরঙ্গের সঙ্গে এক ধরণের ভালোবাসায় পড়ে যান তিনি।
১৯৭০ সালে ঢাকায় জন্ম নেয়া আমাদের লেখকের ছোটবেলার ঢাকার স্কাইলাইন ফাঁকা ছিল অনেকটাই। ফলে, বাসার পুরো ছাদই পাল্টে গিয়েছিল ‘রেডিও অ্যান্টেনা’ হিসেবে। দূরের দুর্বল সিগন্যালকে ‘অ্যাম্পলিফাই’ করার ধারণা নিতে নিতেই চলে যেতে হয় ক্যাডেট কলেজে। ছুটিতে বাসায় এলে চাকরিজীবী বাবা-মা’র দিনের বেলা অনুপস্থিতিতে পুরো বাসাকে ‘আরঅ্যান্ডডি’ ল্যাব বানাতে গিয়ে বৈদ্যুতিক শর্ট-সার্কিটে ফিউজ ওড়ানো ছিল নিয়মিত ঘটনা। বাসায় আগুন ধরানোর জন্যে কম মার খেতে হয়নি তাকে। ইলেকট্রনিক কম্যুনিকেশনের প্রতি ‘অসম্ভব’ দুর্বলতা তাকে নিয়ে আসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিগন্যাল কোরে। মার্কিন সেনাবাহিনীর সিগন্যাল স্কুল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত সরকারি এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৭০টিরও বেশি ট্রেনিং জুড়েছে তার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে। বাংলাদেশ টেলিকম্যুনিকেশন রেগুরেটরি কমিশনে প্রায় সাত বছরের অভিজ্ঞতা দিয়েছে অন্যভাবে চিন্তা করতে। পথ দেখিয়েছে খুব কাছে থেকে বড় স্কেলের ডেটা চিনতে। কোটি কোটি ডেটা রেকর্ডকে সরকারি প্রজ্ঞাতে যুক্ত করতে সরাসরি কাজ করেছেন। ২০০৯ সালে জাতীয় স্কেলে প্রতিটা টেলিকম অপারেটরের ‘ইন্টারকানেকশন ভয়েস কল কস্ট মডেলিং’ তৈরিতে সহযোগিতা করতে গিয়ে ডেটার ব্যাপারে তার ধারণাই পাল্টে যায়। কোটি কোটি মিনিটের ‘ভয়েস কল’ আর ‘এসএমএস’ এর আন্তসংযোগ হোলসেল মূল্য নির্ধারণে ডেটা যে কথা বলে সেটার প্রমাণ দেখেন নিজের চোখে। প্রযুক্তিগতভাবে এ ব্যাপারে দু বছর ধরে সহযোগিতা দেয় ‘ইন্টারন্যাশনাল টেলিকম্যুনিকেশন ইউনিয়ন’ (আইটিইউ)। ডেটার ধারণা তাকে উদ্বুদ্ধ করে টেলিকম্যুনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স করতে। সরকারি কাজের ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে বড় বড় ডেটা ইন্টারমেডিয়ারি (গুগল, ফেইসবুক ইত্যাদি) এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার (আইটিইউ, বিশ্বব্যাংক …) সাথে যোগসূত্র হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি ‘পিএইচডি রিসার্চার’ হিসেবে কাজ করছেন, নীতিনির্ধারকদের জন্য একটা ড্যাশবোর্ড তৈরির ফ্রেমওয়ার্ক নিয়ে। এ মুহূর্তে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে প্রেষণে ‘ন্যাশনাল টেলিকম্যুনিকেশন মনিটরিং সেন্টারে’ কর্মরত।