আইজাক আসিমভ (জানুয়ারি ২, ১৯২০ – এপ্রিল ৬, ১৯৯২), আইপিএ: আইজ়াক্ অ্যাজ়িমভ়্, মূলত ইসাক্ আজ়িমভ়্ কিন্তু বর্তমানে রাশিয়ানে এভাবে লিখা হয়: ছিলেন রাশিয়ান বংশোদ্ভুত এবং রাশিয়ায় জন্মগ্রহণকারী প্রখ্যাত মার্কিন লেখক এবং জৈব রসায়নের অধ্যাপক। তিনি মূলত বিজ্ঞান কল্পকাহিনী এবং জনপ্রিয় বিজ্ঞান বিষয়ক রচনায় সিদ্ধহস্ত ছিলেন এবং এক্ষেত্রে তার সাফল্য গগনচুম্বী। যোগ্যতা বিবেচনায় তাকে বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর গ্র্যান্ড মাস্টার আখ্যায় ভূষিত করা হয়েছে। তিনি জীবনে ৫০০’র-ও অধিক গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনা করেছেন, লিখেছেন প্রায় ৯,০০০ চিঠি ও পোস্টকার্ড। ডিউই দশমিক পদ্ধতি দ্বারা চিহ্নিত ১০টি প্রধান বিষয়ের ৯টির উপরেই তিনি লিখেছেন। আর দর্শনের চিহ্নিত ১০০টি বিষয়ের মাত্র একটির উল্লেখ তার রচনায় পাওয়া যায়না।[২][৩] বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর এই পণ্ডিত তার জীবদ্দশায় চিহ্নিত বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর বিগ থ্রি-এর একজন ছিলেন। অন্য দুজন ছিলেন রবার্ট এ হাইনলেইন এবং আর্থার সি ক্লার্ক।
আসিমভের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ রচনা হচ্ছে ফাউন্ডেশন সিরিজ। তার অন্যান্য প্রধান সিরিজের মধ্যে রয়েছে গ্যালাক্টিক সাম্রাজ্য সিরিজ এবং রোবট সিরিজ যে দুটিকে পরবর্তিতে তিনি ফাউন্ডেশন সিরিজের অন্তর্ভুক্ত করেছেন ভবিষ্যৎ ইতিহাস বিনির্মাণের জন্য। ভবিষ্যৎ ইতিহাস নির্মাণের এই প্রক্রিয়ার অগ্রদূত ছিলেন কর্ডওয়েইনার স্মিথ এবং পাউল এন্ডারসন। তার অসংখ্য ছোটগল্পের মধ্যে নাইটফল গল্পটি ১৯৬৪ সালে সাইন্স ফিকশন রাইটার্স অফ আমেরিকা কর্তৃক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞান কল্পকাহিনী শীর্ষক ছোটগল্পের সম্মানে ভূষিত হয়। তিনি পল ফ্রেঞ্চ ছদ্মনামে ছোটদের জন্য লিখতেন। আসিমভের অধিআকংশ বিজ্ঞান গ্রন্থ এবং গল্পেই বৈজ্ঞানিক ধারণাসমূহ ইতিহাসের আবহে বর্ণীত হয়েছে। এক্ষেত্রে তিনি হয়ত সুদূর ভবিষ্যতের কোন সময় থেকে শুরু করেছেন আর ফিরে গেছেন তখন পর্যন্ত যখন কিনা সেই ধারণাটি ছিলইনা বা থাকলেও ছিল একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে; যখন মানব সভ্যতা ছিল একেবারে সরল। তিনি উপন্যাসের চরিত্রগুলোর জন্ম-মৃত্যুর তারিখ, তাদের নামের উচ্চারণ এবং জীবনী বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। এছাড়া তিনি আমেরিকান হিউম্যানিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি হিসেবে খুব আনন্দিত ছিলেন। এখানেই তার মানবতাবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। ৫০২০ আসিমভ নামক গ্রহাণু, আসিমভ্স সাইন্স ফিকশন নামক সাময়িকী এবং আইজাক আসিমভ পুরস্কার নামে একাধিক পুরস্কারের মাধ্যমে তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে।