20%
সিলেটের উপভাষা: ব্যাকারণ ও অভিধান



Book Details
Title | সিলেটের উপভাষা: ব্যাকারণ ও অভিধান |
Author | ড. শ্যামল কান্তি দত্ত |
Publisher | আগামী প্রকাশনী |
Category | ভাষা |
ISBN | 9789840420469 |
Edition | 1st Published, 2018 |
Number Of Page | 456 |
Country | বাংলাদেশ |
Language | বাংলা |
Cover Type | হার্ড কভার |
Book Description
Author Info

জন্ম : ২০ শে অক্টোবর, ১৯৭০, সালন, টিলাগাঁও, মৌলভীবাজার । ভাষাতাত্ত্বিক, কবি ও প্রাবন্ধিক । আট মাস বয়সে বাবা-মায়ের সাথে ত্রিপুরা রাজ্যের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় লাভ (১৯৭১)। নয়াবাজার কৃষ্ণচন্দ্র বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি (১৯৮৬) এবং সিলেট মুরারীচাঁদ কলেজ থেকে এইচএসসি (১৯৮৮)। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯১-এ বিএ (অনার্স) ও ১৯৯২-এ এমএ (বাংলা) ডিগ্রি লাভ। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিলেটের উপভাষা’ বিষয়ে গবেষণার জন্য ২০১৫-এ পিএইচডি ডিগ্রি লাভ । বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপােরেশন’র অধীন চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কলেজের সহকারী অধ্যাপক । প্রভাষক, (বাংলা) পদে কাজ করেছেন শাহজালাল কলেজ ও কর্ণফুলী পেপার মিলস কলেজে। সপরিবারে বসবাস কর্ণফুলীর মােহনার সন্নিকটে সরকারী নিবাসে ।
Publisher Info

আগামী প্রকাশনী বাংলাদেশের ঢাকায় অবস্থিত একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। ১৯৮৬ সালে ওসমান গণি কর্তৃক এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালের হিসেব এ-পর্যন্ত প্রকাশনার প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ১৮০০-এর অধিক। ১৯৭১ সালে সংগঠিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ওপর ভিত্তি করে উল্লখেযোগ্য সংখ্যক গ্রন্থ প্রকাশের মাধ্যমে এ-প্রকাশনা পরিচিত হয়ে ওঠে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] প্রকাশনীর বর্তমান স্লোগান, মুক্তিযৃদ্ধ ও মুক্তচেতনা আমাদের প্রকাশনা’।’
- Reviews (1)
গবেষক ড. শ্যামল কান্তি দত্ত ১৯৭০ সালে মৌলভীবাজারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক ও ভাষাতাত্ত্বিক। তাঁর গবেষণার বিষয় সিলেটের উপভাষা। পাশাপাশি সেই ভাষার পূর্ণাঙ্গ অভিধানও রচনা করেছেন। সিলেটের উপভাষা : ব্যাকরণ ও অভিধানÑ এটি তাঁর প্রথম প্রকাশিত গবেষণাগ্রন্থ। সহজেই অনুমেয় যে গবেষক শ্যামল যথেষ্ট পরিশ্রম ও সময় ব্যয় করেছেন গ্রন্থটি রচনা করতে গিয়ে। সিলেটি উপভাষার নানা কারণে গুরুতপূর্ণ। প্রান্তীয় ভাষা এবং অসমীয়া (কামরূপী) ভাষার সংলগ্নতা এই গুরুত্বের অন্যতম কারণ। এই উপভাষা সম্পর্কে মুহম্মদ আবদুল হাই এবং সৈয়দ মুজতবা আলী আমাদের আরও সচেতন করে গেছেন। তাঁদের ধারাবাহিকতায় গবেষক ড. শ্যামল কান্তি দত্ত বিষয়টিকে আলোচনায় আরও প্রসারিত করার প্রয়াসী হয়েছেন। তাঁর গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাসেম। জন্মসূত্রে শ্যামল সিলেটের অধিবাসী বলে এ ভাষা সম্পর্কে তাঁর দখল অধিক। সিলেটের উপভাষা (২০১৪) শীর্ষক পিএইচ.ডি. অভিসন্দর্ভের গ্রন্থরূপ সিলেটের উপভাষা : ব্যাকরণ ও অভিধান (২০১৮) সম্প্রতি প্রকাশিত হয়।
ভাষাতাত্ত্বিক ও গবেষক অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান গ্রন্থটির একটি দীর্ঘ ভূমিকা লিখে লেখক-গবেষক শ্যামল কান্তিকে দত্তকে সম্মানিত করেছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্যামল তাঁর প্রিয় ছাত্র ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমিও শ্যামলের সতীর্থ ছিলাম। কিন্তু এ রকম একটি পরিশ্রমী ও সময়সাপেক্ষ কাজ করার সাহস আমার কখনও হয়নি। আমরা যে কাজটি করতে পারিনি, দেরিতে হলেও বন্ধুবর শ্যামল অনেক শ্রম-সময়-নিষ্ঠাসহযোগে সেই কাজটি করে দেখিয়েছেন। তাঁর এই উদ্যম প্রশংসনীয়। ড. মনিরুজ্জান বলেন, ‘তিনি সিলেট ভূ-অঞ্চলের সীমা ও প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য আলোচনা শেষে ভাষিক উপাদান নিয়ে পূর্বসূরিগণ যে বিশ্লেষণ করে গেছেন তা নিয়ে যেমন বিস্তৃত আলোচনা করেছেন, তেমনি নিজস্ব মাঠকর্মভিত্তিক সংগৃহীত তথ্যের (ধ্বনি-রূপ-বাক্য-অর্থগত উপাদান) ভিত্তিতে নিজস্ব বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি বাংলাদেশে উপভাষার তুলনামূলক আলোচনাকারীদেরও একজন। উপভাষার নানা খুঁটিনাটি বিবরণে এবং তত্ত্বীয় আলোচনাতে তাঁর আগ্রহ ও আন্তরিকতা আমাদের মনোযোগ দাবি রাখে। সিলেটের উপভাষা তাঁর মাতৃভাষা হলেও নির্মোহভাবেই তিনি এই প্রান্তজনের ও মাতৃবুলির স্বরূপ ও বৈশিষ্ট্যটি তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। আলোচনাটি পদ্ধতিসিদ্ধ বা মেথডিক্যাল ও যথাবিস্তৃত। লেখকের ভাষাও সহজ-সরল। সিলেটের উপভাষা নিয়ে ইতোপূর্বে যারা আলোচনা করেছেন, তার মধ্যে এই আলোচনাটিও যে প-িত মহলে আদরণীয় হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। সব আলোচনারই কিছু না কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। যেমন এখানেও লেখকের তাত্ত্বিক ধারণার সঙ্গে দু-এক জায়গায় অনেকের অমিল হতে পারে। এই বিষয়টি আগে পরিষ্কার করে নেয়া যাক। তাত্ত্বিক আলোচনা একটি ভিন্ন ব্যাপার। যেমন ঐতিহাসিকভাবে লেখক ‘সিলেটি’ উপভাষাকে ‘উপভাষা মিশ্রণ’ বলেছেন। সিলেটির ধ্বনি ও রূপ সীমান্তবর্তী অসমীয়া প্রকৃতি গ্রহণ করেনি। স্বরক্ষেপে কিছু বৈচিত্র্য পাই বটে, তবে ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ এবং ওয়ারি-বটেশ্বরের প্রান্তেও তার পরিচয় বা মিল (আংশিক ভাবেও) অস্পষ্ট নয়। সিলেটি ভাষার আলোচনা এইসব কারণ এবং পরিপ্রেক্ষিতকে ঘিরেই। তাই এর আলোচনা খুব সরল কিংবা সহজ নয়, বরং তা যথেষ্টই আয়াসসাধ্য বলে মনে হয়।’ পৃষ্ঠা-১২-১৩।
গ্রন্থটি সম্পর্কে কয়েকজন ভাষা-গবেষক ও ভাষাতাত্ত্বিক যে মূল্যবান মন্তব্য করেছেন তা নি¤েœ তুলে ধরা হল। ড. আবুল কালাম মনজুর মোরশেদ বলেন-‘অভিসন্দর্ভ রচনায় মূল্যবান উপাত্ত সংগ্রহ ও বিষয় ব্যাখ্যায় পরিশ্রম ও বিশ্লেষণশক্তির পরিচয় দিয়েছেন। … গবেষক সিলেটের ভূগোল-ইতিহাসের যে পরিচয় দিয়েছেন তা বিশেষ গুরুত্বের অধিকারী এবং সমগ্রিকভাবে সিলেটের বিস্তৃত ইতিহাস ধরা পড়েছে। … এই প্রথম এক্স-বার পদ্ধতির সাহায্যে উপভাষার বাক্য বিশ্লেষণে গবেষক কৃতিত্বের অধিকারী। আলোচ্য অধ্যায়ে অসংখ্য উপাত্তের সহায়তায় সিলেটের বাক্যরীতিক বৈশিষ্ট্যের বৈচিত্র্য নির্দেশিত।… সিলেটের রূপমূলভা-ারের তালিকা বা অভিধান প্রণয়নে গবেষকের নিষ্ঠাবোধ প্রশংসনীয়।’ ড. মোঃ আবুল কাসেম বলেন- ‘গবেষক বাংলা ভাষার অন্যতম উপভাষা হিসেবে সিলেটি উপভাষার অবস্থান বিষয়ে পূর্ববর্তী গবেষকগণের মতামত বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করেছেন এবং তৎসঙ্গে নিজস্ব মতামত উপস্থাপন করেছেন। গবেষক সিলেটি ভাষার ধ্বনিবিচার প্রসঙ্গে উক্ত উপভাষার ধ্বনিমূল এবং সহধ্বনির সুনির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ণয় ছাড়াও এ ভাষাটি ঃড়হধষ ভাষা কিনা, এই ভাষায় মহাপ্রাণতার স্বরূপ কী ইত্যাদি নানা প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন বিবেচনা করেছেন এবং সুনির্দিষ্ট মতামত প্রদান করেছেন। … গবেষকের সকল বিবৃতি যুক্তি ও তথ্য দ্বারা সমর্থিত।’
অভিধান প্রসঙ্গে বলা যায়, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সম্পাদিত বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান (১৯৬৫) এর পর এই প্রথম সিলেটের উপভাষার পাঁচ হাজারের অধিক শব্দের ব্যুৎপত্তি বা উৎস, পদ-পরিচয় ও বাক্যে ব্যবহার সংবলিত অভিধান আমরা হাতে পেলাম।
পাশাপাশি সিলেটের উপভাষায় বাংলা ভাষার সকল ধ্বনির বিদ্যমানতার প্রমাণও গবেষক দেখান অভিধান প্রণয়নের মধ্য দিয়ে। এটি পেশাগত কারণে সিলেটে আসা অন্য অঞ্চলের মানুষের যেমন কাজে লাগবে তেমনি বাংলাদেশের উপভাষা গবেষণায়ও রসদ যোগাবে। আঞ্চলিক ভাষার ব্যাকরণের সঙ্গে সিলেট অঞ্চলের ভূগোল-ইতিহাসসহ প্রায় দু’শ’ পৃষ্ঠার অভিধান সংযোজন করার ফলে এটিকে বাংলা ভাষায় প্রথম আঞ্চলিক ভাষার গবেষণাগ্রন্থ বলা যেতে পারে।