মোগল সম্রাট হুমায়ূন
Printed Price: TK. 700
Sell Price: TK. 595
15% Discount, Save Money 105 TK.
Summary: মোগল সম্রাট হুমায়ূন
মোগল সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় সম্রাট। ১৫৩০ খ্রিষ্টাব্দে মোগল সাম্রাজ্যের প্রথম সম্রাট বাবর -এর মৃত্যুর পর, তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র
Read More... Book Description
মোগল সম্রাট হুমায়ূন
মোগল সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় সম্রাট। ১৫৩০ খ্রিষ্টাব্দে মোগল সাম্রাজ্যের প্রথম সম্রাট বাবর -এর মৃত্যুর পর, তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র হুমায়ুন সিংহাসনে বসেন। মায়ের নাম মহিম বেগম।
১৫০৮ খ্রিষ্টাব্দের ৬ মার্চ কাবুলে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের পর তাঁর নাম রাখা হয়েছিল নাসিরউদ্দিন হুমায়ুন। শৈশবে তিনি আরবি, তুর্কি এবং ফার্সি ভাষা শেখেন প্রাসাদের গৃহ শিক্ষকদের কাছে। এছাড়া অঙ্ক, জ্যোতিষশাস্ত্র, দর্শনও শেখেন বিভিন্ন পণ্ডিতদের কাছে। এরপর বাবরের ইচ্ছায় তিনি প্রশাসনিক কাজে যোগ দেন। ১৫২৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পাণিপথের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৫২৭ খ্রিষ্টাব্দে খানুয়ারের যুদ্ধে বাবরের সাথে রাণা সংগ্রাম সিংহের যুদ্ধের সময়, তিনি বাবরকে সাহায্য করেন।
ভারতে মোগল সাম্রাজ্যের প্রাথমিক ভিত্তি স্থাপনের পর, ১৫২৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বাদাক্শানের শাসনকর্তা হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৫৩০ খ্রিষ্টাব্দে সম্রাট বাবর -এর মৃত্যুর পর, তিনি সিংহাসনে আরোহণ করেন। সিংহাসনে আরোহণের কিছুদিন পর, তাঁর ভাই কামরান বিদ্রোহ করেন। কামরান সিন্ধু নদ অতিক্রম করে পাঞ্জাব দখল করেন। এই সময় হুমায়ুন কামরানকে কোনো বাধা দেন নি। ফলে কাবুল, কান্দাহার এবং পাঞ্জাব কামরানের অধিকারে চলে যায়।
হুমায়ুনের এই নিষ্পৃহতায় উৎসাহিত হয়ে, গুজরাটের অধিপতি বাহাদুর শাহ শক্তিশালী সেনাবাহিনী তৈরি করে, হুমায়ুনের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেন। বাহাদুর শাহ প্রথমে মেবারের রাণার সাহায্যে মালব দখল করেন। এরপর তিনি আহম্মদনগর, খান্দেশ ও বেরারে শাসকদের বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য করেন। অন্যদিকে পর্তুগিজদেরও কার প্রদানে বাধ্য করেন। এই সময় বিদ্রোহী মোগল আমিরদের অনেককে তিনি আশ্রয় দেন। ফলে হুমায়ুন বাহাদুর শাহকে শায়েস্তা করা জন্য মেবার ও গুজরাট আক্রমণ করেন। বাহাদুর শাহ পরাজিত হয়ে পলায়ন করেন, ফলে মালব ও গুজরাট হুমায়ুনের অধিকারে আসে। ১৫৩০ খ্রিষ্টাব্দের দিকেই বিহারের শেরশাহ বিদ্রোহ করেন। হুমায়ুন চুনার দুর্গ দখল করলে, শেরশাহ মৌখিকভাবে বশ্যতা স্বীকার করেন। বিহারের এই ব্যস্ততার সুযোগে বাহাদুর শাহ পুনরায় আহমদনগর ও গুজরাট আক্রমণ করে দখল করে নেন।
বিহারের আফগান নেতা শেরশাহ ১৫৩৭ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে, বাংলার শাসনকর্তা মাহমুদ শাহ-এর কাছ থেকে বাংলার অধিকাংশ স্থান দখল করেন। শেরশাহ এই শক্তি বৃদ্ধিতে শঙ্কিত হয়ে, হুমায়ুন ১৫৩৭ খ্রিষ্টাব্দে চুনার আক্রমণ করে দখল করে নেন। শেরশাহ বিপদ বুঝে গৌড় ত্যাগ করে চলে যান। এই সময় হুমায়ুন গৌড়ে প্রায় নয় মাস অবস্থান করেন। এই সময়ের ভিতর শেরখাঁ বারাণসী, জৌনপুর ও কনৌজ দখল করে নেন। ফলে হুমায়ুন দ্রুত আগ্রা ফিরে যাওয়ার জন্য অগ্রসর হন। ১৫৩৯ খ্রিষ্টাব্দে পথিমধ্যে বক্সারে কাছাকাছি চৌসাতে শের শাহ মোগল বাহিনীর মুখোমুখী হন। প্রথমে শের শাহ হুমায়ুনের কাছে সন্ধির প্রস্তাব পাঠান। হুমায়ুন তাতে সম্মতি জানিয়ে সন্ধির জন্য প্রস্তুত হন। মোগল শিবিরে অসতর্কতা লক্ষ্য করে, শেরশাহ আকস্মাৎ আক্রমণ করে, মোগল শিবির তছনছ করেন। হুমায়ুন অতি কষ্টে আগ্রায় ফিরে যেতে সক্ষম হন। ফলে বাংলা ও বিহারের উপর পুনরায় শেরশাহ -এর পূর্ণ অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।
এর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ১৫৪০ খ্রিষ্টাব্দে একটি বিশাল বাহিনী নিয়ে হুমায়ুন পুনরায় শেরশাহ বিরুদ্ধে অভিযান চালান। কনৌজে পৌঁছে হুমায়ুন প্রায় এক মাস নিষ্ক্রিয় অবস্থায় কাটান। এই সময়ের ভিতরে শেরশাহ আক্রমণের সুযোগ খুঁজতে থাকেন। তারপর মোগল বাহিনীর অসতর্ক মুহুর্তে আক্রমণ করে, তাদেরকে নাস্তানাবুদ করেন। এই যুদ্ধে হুমায়ুন পরাজিত হয়ে আগ্রা ত্যাগ করে কাশ্মীরে পথে চলে যান। পথে তাঁর ভাই কামরান বাধা দিলে আশ্রয় পাওয়ার স্থানের সঙ্কট হয়। এই সময় মাড়বারের রাজা মালদেব তাঁকে আশ্রয় দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু মালদেব ইতিমধ্যে শেরখাঁর সাথে চুক্তি বদ্ধ হয়ে হুমায়ুনকে বন্দী করার উদ্যোগ নেন। ফলে তিনি পুনরায় সিন্ধু অঞ্চলে ফিরে আসেন। এখানে অমরকোটে তিনি রাজপুতদের আশ্রয় লাভ করেন। এখানেই ১৫৪২ খ্রিষ্টাব্দে আকবরের জন্ম হয়। এখান থেকে তিনি কামরানের সাহায্য প্রার্থনা করেন। কিন্তু কামরান সাহায্যের পরিবর্ত বন্দী করার উদ্যোগ নেন। এরপর তিনি পালিয়ে পারশ্যে যান।
১৫৪৩ খ্রিষ্টাব্দের দিকে তিনি পারশ্যের শাহ তহমাস্প-এর আশ্রয়ে থাকার সময়, তিনি শিয়া মতবাদ গ্রহণ করবেন এবং কান্দাহর পারশ্যের শাহকে প্রদান করবেন, এই চুক্তিতে একটি পারশ্য সেনাদলের অধিকার পান। এরপর এই সেনাবহিনী নিয়ে ১৫৪৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কাবুল ও কান্দাহার দখল করেন। চুক্তি অনুসারে তিনি কান্দাহার পারশ্যরাজের কাছে সমর্পণ করেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে শাহ তহমাস্প মৃত্যুবরণ করলে, হুমায়ুন পুনরায় কান্দাহারের অধিকার নিয়ে নেন।
১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে শের শাহ-এর মৃত্যু হলে, তাঁর উত্তরাধিকারদের মধ্যে আত্মকলহের সৃষ্টি হয়। এই সুযোগে ১৫৫৫ খ্রিষ্টাব্দে হুমায়ুন লাহোর দখল করে নেন। এই বৎসরেই তিনি সিকন্দর সুরকে পরাজিত করে দিল্লী ও আগ্রা দখল করেন। ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দে সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর দিল্লীর সিংহাসনে বসেন আকবর।
Reviews
There are no reviews yet.