কেউ কেউ একা
Printed Price: TK. 200
Sell Price: TK. 156
22% Discount, Save Money 44 TK.
Summary: এভাবেই কেটে গেল তিনটি মাস। নদীর কতশত জল গড়িয়ে পড়লো সমুদ্রের বুকে। কত গুলো পাখি হারালো নিজেদের নীড়! শহরের বোবা পাগলেরা আবারো হারিয়ে গেলো সভ্যদের ভীড়ে। পুনরায় কিছু নতুন পাগল
Read More... Book Description
এভাবেই কেটে গেল তিনটি মাস। নদীর কতশত জল গড়িয়ে পড়লো সমুদ্রের বুকে। কত গুলো পাখি হারালো নিজেদের নীড়! শহরের বোবা পাগলেরা আবারো হারিয়ে গেলো সভ্যদের ভীড়ে। পুনরায় কিছু নতুন পাগল এসে জোটে। শহরের অলি গলি ওদের নির্বাক স্লোগানে মুখরিত হয়। ওদের কথা কেউ শোনে না। পাগলেরা ফিরে ফিরে আসে। সভ্যতা অবিরত দেখাতে থাকে তার নিকৃষ্ট চেহারা। শহরের পশ্চিমের যেই নদীটি একসময় যৌবনের চির উন্মাদনায় বয়ে চলতো। যার জল গায়ে মেখে বড় হয়েছি আমি তুমি; সেই নদীটি আজ মৃত প্রায়। আধুনিক সভ্যতার তকমা লাগানো মানুষ গুলো হয়ে পড়েছে আরো বেশি অসভ্য। শায়েরের চাকরিটা হয়েছিল পরের মাসেই। আগের গুলোর চাইতে বেটার। এখানে সামান্য পরিমাণে হলেও চাকরির নিরাপত্তা আছে। সেই স্বস্তির খবরের পাশাপাশি স্যালারিটাও মন্দ নয়। নীতু এই খবরে খুশি হয়েছিল কিনা সেটা বলা মুশকিল। তবে সেই খোশ আমেজটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় নি শায়েরের ভেতরে। সে নীতুকে বলেছিল এখন চাকরিটা ছেড়ে দাও। নীতু স্বাভাবিক ভাবেই উত্তর দিয়েছিল, কেন? আমার চাকরিতে তোমার কি সমস্যা? সমস্যার কথা তো বলি নি নীতু। শুধু তোমার দিকটা ভেবেছি। আর আমাদের এত টাকা দিয়ে কি হবে বলো? টাকা দিয়ে তোমার কিছু না হতে পারে। আমার হবে। মস্তবড় ক্ষতি হবে। এতদিন তোমার কথা শুনেই আমার এই হাল। নইলে তুমি জানো আমি কত ভালো অবস্থানে যেতে পারতাম! তাহলে তুমি এই চাকরিটা ছেড়ে দাও। অন্য জায়গায় ট্রাই করো। আমিও দেখি কোথাও। বেশ ধীর কন্ঠে বলল শায়ের। কথাটা শুনে নীতু একেবারে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলো, তোমার এই চাকরিতে সমস্যাটা কি শুনি! একেবারে গাধার মতো কথা বলছো! অলরেডি তিন মাস আমি সার্ভিস করে ফেলেছি। তুমি জানো আর তিন মাস পরে আমার অন্য ব্রাঞ্চে ট্র্যান্সফার হওয়ার সম্ভাবনা আছে। থার্টি পারসেন্ট স্যালারি বাড়বে। তোমার সাথে আসলে কথা বলাই উচিৎ না! শায়ের মাথাটা নিচু করে ড্রয়িং রুমে গিয়ে বসলো। সে আগেই ভেবেছিল নীতুকে কিচ্ছু বলবে না। কিন্তু মন তো মানে না। ভালোবেসে বিয়ে করেছিল সে নীতুকে। যার মাত্রাটা দিন দিন বেড়েছে কমেনি। একই বিছানায় যখন অচেনা মানুষের মতো রাত কাটাতে হয় তখন ওর বুক ভেঙ্গে কান্না আসে। কত কত দিন সে সারারাত নীতুর ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে কাটিয়ে দিয়েছে; নীতু কি সেই খবর রাখে! সে সবসময় নীতুর কাছ থেকে নিজেকে আড়াল করে রেখেছে। সে কখনো চায় নি নীতু ওর ভেজা চোখ দেখুক। নীতু জানুক সবকিছু থেকেও কেউ কেউ কত একা, কতটা নিঃসঙ্গ। হ্যাঁ নীতুকে এখন সে ঘৃণা করে। মাঝে মাঝে মন চায় নীতুকে ছেড়ে যদি অনেক দূরে চলে যাওয়া যেতো। যেখানে কেউ ওকে চিনবে না। নিত্য দিন এমন অভিনয়ে অভিনয়ে কাটাতে হবে না জীবন। নীতুর ভয়ংকর সুন্দর চোখ যেখানে ওর ছায়াটি পর্যন্ত দেখতে পাবে না। কিন্তু পরক্ষণেই ওর মত পরিবর্তন হয়। ও আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবে এইসব ভালোবাসার কি কোন দাম নেই! নীতু কেন ওর সাথে এমন করলো! এর চাইতে যদি নীতু ওর গলায় ধারালো ছুরি চালিয়ে দিতো তাতেও বোধ এতটা কষ্ট হত না। নাহ নীতুকে সে ছেড়ে দেবে না। যদি এভাবে সারাজীবন অভিনয় করে কাটিয়ে দিতে হয় তবে তাই হোক। বড্ড দেরীতে হলেও নীতু জানুক তার জন্য একটা মানুষ কতটা অধীর অপেক্ষায় থাকে।
Reviews
There are no reviews yet.