কর্নেলকে কেউ চিঠি লেখে না ও ছয়টি গল্প
Printed Price: TK. 200
Sell Price: TK. 160
20% Discount, Save Money 40 TK.
Summary: ১৮৯৯ থেকে ১৯০২ সাল। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ার এই তিন বছর ছিল এক সহিংসতার কাল। একনাগাড়ে তিন বছর স্থায়ী ছিল গৃহযুদ্ধ। কলম্বিয়ার ইতিহাসে ‘সহস্র দিনের যুদ্ধ’ নামে পরিচিত এই সময়কে
Read More... Book Description
১৮৯৯ থেকে ১৯০২ সাল। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ার এই তিন বছর ছিল এক সহিংসতার কাল। একনাগাড়ে তিন বছর স্থায়ী ছিল গৃহযুদ্ধ। কলম্বিয়ার ইতিহাসে ‘সহস্র দিনের যুদ্ধ’ নামে পরিচিত এই সময়কে কেন্দ্র করে ১৯৫৭ সালে গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস এস্পানিয়োল ভাষায় লেখেন উপন্যাস এল কোরোনেল নো তিয়েনে কিয়েন লে এস্ক্রিবা; যার সরাসরি বাংলা অনুবাদে রফিক-উম-মুনীর চৌধুরী এর নামকরণ করেছেন কর্নেলকে কেউ লেখে না। ইংরেজি অনুবাদে এর নাম নো ওয়ান রাইটস টু দ্য কর্নেল।
কর্নেলকে কেউ লেখে না উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র সাবেক একজন কর্নেল, যিনি ছিলেন ওই গৃহযুদ্ধের সৈনিক। এ যুদ্ধে যারা পরাজিত হয়েছে, তাদের হয়ে তিনি যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। যুদ্ধ-অবসানের প্রাক্কালে দুই পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। চুক্তির প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বৃদ্ধ বয়সে কর্নেলের প্রতি মাসে অবসরভাতা পাওয়ার কথা। স্ত্রীসহ তাঁর ছোট সংসারের ব্যয় নির্বাহের জন্য অবসরকালীন ভাতাই যথেষ্ট। কিন্তু উপন্যাসের শেষ অবধি দেখা যায়, কর্নেল ভাতা পাওয়ার আশা পূরণ হয় না। অথচ প্রতি শুক্রবার আট কিলোমিটার দূরের নদীঘাটে গিয়ে অপেক্ষা করেন তিনি। কারণ, লঞ্চে করে ডাকপিয়ন নিয়মিত চিঠি নিয়ে আসেন। প্রতি সপ্তাহেই স্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন, তাঁদের অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে—সামনের সপ্তাহে নিশ্চয়ই ডাকপিয়ন তাঁর কাঙ্ক্ষিত সেই চিঠি নিয়ে আসবেন। চিঠি আসে না।
বৃদ্ধ কর্নেল দম্পতির অভাব-অনটনের সংসারে ছিল উপার্জনক্ষম এক ছেলে, আগুস্তিন। কলম্বিয়ার ঐতিহ্যবাহী মোরগ-লড়াইয়ের সময় তাকে হত্যা করা হয়। লড়াইয়ে যাওয়ার আগে মা-বাবাকে আগুস্তিন বলে গিয়েছিল, ‘আজ বিকেলে আমরা টাকার ওপর গড়াগড়ি খাব।’ আসলে মোরগ লড়াইয়ের একেবারে শেষ দিকে, যখন বিজয়টা ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র, তখনই তাঁকে খুন করা হয়। ছেলের স্মৃতিস্বরূপ মোরগটাকে বাঁচিয়ে রাখতে চান কর্নেল। তাই অজুহাত খোঁজেন, ‘তিন মাসের মধ্যে লড়াইটা হবে আর তখন ভালো দাম দেখে আমরা একে বিক্রি করতে পারব।’ কিন্তু স্ত্রীর ভাষ্য, ‘টাকা ব্যাপার না…ওকে নিয়ে ওরা যা খুশি করুক।’ উত্তরে কর্নেল ছেলের কথা ভাবতে বলেন, ‘মোরগটা লড়াইয়ে জিতবার পর ওর খুশিমুখটা একবার ভাবো, আমাদের সঙ্গে এসে কথা বলার মুহূর্তটা।’ ছেলের রেখে যাওয়া সেলাই মেশিন বিক্রি করা .
.
হয়েছে মোরগের খাদ্য আর নিজেদের খরচের জন্য। মোরগ ছাড়া ঘরে বিক্রি করার মতো আছে পুরোনো মডেলের একটি ঘড়ি। ঘড়ি বিক্রি করতে গিয়ে ফিরে আসেন। কারণ, পুরোনো মডেলের ঘড়ি কেউ কেনে না।
মোরগের খাবার জোটাতে পারেন না; বরং মোরগের জন্য কয়েকজন ছেলের দেওয়া খাবারের অংশও তাঁরা গোপনে খেয়ে নেন। এ রকম নিদারুণ কষ্টের অনুভূতির মধ্য দিয়ে ঔপন্যাসিক পাঠককে নিয়ে যান উপন্যাসের সমাপ্তির দিকে। তবু কর্নেল তাঁর স্ত্রীকে আশান্বিত করতে চান আর তাঁর স্ত্রী ‘যদি না হওয়ার’ শঙ্কা থেকে কর্নেলকে একের পর এক প্রশ্ন করেন। কারণ, ‘একটা মোরগের চেয়েও’ কম মূল্যের জীবন নিয়ে পনেরো বছর অপেক্ষায় থেকে থেকে রোগজীর্ণ হয়ে গেছে তাঁর শরীর। তবু স্বামীর প্রতি অনুরাগ-শ্রদ্ধা এতটুকু কমেনি তাঁর। শেষ দিকে অবশ্য কর্নেলকে ‘অবিবেচক’ আখ্যা দেন, ‘তোমার বোঝা উচিত যে আমি মারা যাচ্ছি, আমার যা হয়েছে তা কোনো অসুখ নয়, বরং নিদারুণ যন্ত্রণা।’
Reviews
There are no reviews yet.